মাঝে মাঝে অপ্রত্যাশিতভাবে মানুষের কাছে সহায়তা আসে। ভারতের উরিষ্যা প্রদেশের সেই দানা মাঝির কথাই স্মরণ করুন; যিনি মৃত স্ত্রীকে কাঁধে নিয়ে ১০ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য হাসপাতাল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে বাড়িতে পৌঁছাবেন।
যক্ষা আক্রান্ত স্ত্রী উড়িষ্যার হাসপাতালে মারা যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গাড়ি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। পরে কোনো উপায় না পেয়ে ১২ বছর বয়সী মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীর মরদেহ কাঁধে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিলেন তিনি। দারিদ্র সেই দানা মাঝির দিকে সহায়তার কোনো হাত এগিয়ে দেয়নি ভারত সরকার। এবার অপ্রত্যাশিতভাবেই সহায়তা পেলেন দানা মাঝি; তবে ভারত সরকার নয়, বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রীর হৃদয় ছুঁয়েছিল দানা মাঝির কষ্ট; তিনিই সহায়তার ঘোষণা দিলেন দানা মাঝিকে।
বাদশা খলিফা বিন সালমান আল খলিফা উড়িষ্যার দানা মাঝি ও তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। দ্য ডেইলি গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী খলিফা বিন সালমান আল খলিফা দানা মাঝির সম্পর্কে জেনেছেন। তবে দানা মাঝির সেই বিপদের সময় পাশে দাঁড়াতে না পেয়ে কষ্ট পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
বাহরাইন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দেশটিতে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। পরে দানা মাঝি ও তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দূতাবাসের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দিয়েছে বাইরাইন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। তবে ঠিক কত অর্থ সহায়তা হিসেবে তুলে দেয়া হয়েছে দূতাবাস কর্মকর্তাদের হাতে তা জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, দানা মাঝির স্ত্রী অমং দেই (৪২) যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৩ আগস্ট রাতে উড়িষ্যার কালাহান্ডি হাসপাতালে মারা যান। ওই দিন দানা মাঝি বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম যে, আমি গরিব মানুষ এবং গাড়ি ভাড়া করার সামর্থ্য নেই। অনুরোধ করেছিলাম কিন্তু তারা কোনো সহায়তা করেনি। স্ত্রীর মরদেহ কাপড়ে মোড়ানোর পর কাঁধে করে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে হেঁটে রওনা দেন তিনি। পরে স্থানীয় এক কর্মকর্তা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তার আগেই স্ত্রীর মরদেহ কাঁধে নিয়ে মাঝি হেঁটেছিলেন ১০ কিলোমিটার।
পাঠকের মতামত